“সুইট অন হুইল”: বেকারত্বের সমস্যার সমাধানে মানভূম দুগ্ধ সংঙ্ঘ

১৯ই আগস্ট, ২০২০, করোনার পরিস্থিতিতে বেকারত্বের সমস্যার কিছুটা সমাধান স্বরূপ মানভূম দুগ্ধ সঙ্ঘের নতুন প্রকল্প ভ্রাম্যমাণ বিপননকেন্দ্র “sweet on wheel” এর উদ্বোধন করলেন পুরুলিয়া জেলার জেলাশাসক শ্রী রাহুল মজুমদার মহাশয় ।

এই প্রকল্পের দ্বারা ইচ্ছুক বেকার উদ্যোক্তারা “সুইট অন হুইল” এর ফ্রাঞ্চাইজি নিতে পারবে। তাও আবার প্রথম বারো মাস কোনো ফ্রাঞ্চাইসি ফী লাগবে না এই প্রকল্পের মাধ্যমে। অতি সামান্য খরচে ভ্রাম্যমাণ এই সাইট অন হুইল তৈরি করে আয়ের পথে দেখবেন ইচ্ছুক মহিলা ও পুরুষ উভয়। এই প্রকল্পটির আয় ব্যায় হিসেব করার জন্য মানভূম দুগ্ধ সঙ্ঘের তরফ থেকে একটি ট্রিয়াল রান করা হয়। তাকে অনুমান করা যায় একজন ব্যক্তি গড়ে মাসিক ৬০০০ থেকে ১২০০০ টাকা আয় করতে পারেন, বাকি সমস্ত খরচ যথা গাড়ির ভাড়া , পরিষ্কার করার খরচ, লাইসেন্স ফী ইত্যাদি মিটিয়ে।

পাওয়া যাবে রসগোল্লা, গোলাপজামুন, সাধের পেরা, গোন্ডের লাড্ডু, মতিচুর লাড্ডু, বেসনের লাড্ডু, কাজু বরফি, রসমালাই, এবং আরো জনপ্রিয় সব জিভে জল আনা আহারাদি। এছাড়াও রয়েছে মানভূম দুগ্ধ সংঘের পুরুলিয়ার পতন্ত গ্রামের দুগ্ধ সমবায় সমিতি গুলি থেকে আসা ঘাস খাওয়া দেশী গাইয়ের দুধ, পানীর, লসি, এবং ঘি। কৃতিম রং বা গন্ধ না ব্যাবহার করে তৈরি এই সুস্বাদু খাবার, ছোট- বড় , সবার জিভে জল এনে দেয়। সর্বপরি এ সমস্ত দ্রব্যের দাম সবার আয়ত্বের মধ্যে।

ইতিমধেই মানভূম দুগ্ধ সঙ্ঘ পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সরকারি দুগ্ধ সঙ্ঘ জাকিনা amazon. in এর মতন আন্তর্জাতিক ই-কমার্স বিপণন সংস্থার মাধ্যম দিয়ে, ভারতবর্ষের সমস্ত প্রান্তে মানভূম ঘি কে পৌঁছে দিয়ে নিজেদের মার্কেটইনের নিপুনতার নজির গড়েছে।

পুরুলিয়া শহর থেকে দূরে অবস্থিত পতন্ত গ্রামের সহস্রাধিক মহিলা দুগ্ধ চাষীদের দ্বারা গঠিত এই সঙ্ঘের গ্রামীন স্তরে ২১ টি দুগ্ধ সমবায় সমিতি, ১ টি দুগ্ধ সীতালিকরণ কেন্দ্র বর্তমানে সক্রিয়। প্রত্যেক দিন এই সমিতি গুলিতে দুবেলা প্রাথমিক ভাবে দুধের গুণমান নির্ণয় এবং ভেজাল পরীক্ষা করে দুধ সংগ্রহ করা হয়। এই দুধ নিকটবর্তী শীতলিকরণ কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ভেজাল পরীক্ষা করা হয় এবং ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ঠান্ডা করা হয়। তারপর এই ঠান্ডা দুধ পৌছিয়ে যায় পুরুলিয়া শহরে অবস্থিত প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধীনে থাকা পুরুলিয়া দুগ্ধগারে। দুগ্ধগারে তৃতীয়বার দুধের পরীক্ষা করাহয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এই দুধ দিয়ে তৈরি হয় মানভূম ঘি, পানের, দই, পেরা, লসি, এবং মিষ্টি। এই সব উৎপন্ন দ্রব্য গুলি বিক্রি হয় জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মিষ্টি জঙ্গল মহল এবং রুপাই দোকান গুলি তে। শহর জুড়ে গোটা ৩টি মিষ্টি জঙ্গলমহলের স্টল এবং ১টি রুপাই স্টল আছে।

বর্তমানে করোনা দূর্যোগের কঠিন সময় চাষিদের দুধের বিক্রি বজায় রাখতে অনলাইনে ইকমার্স কে বেঁছেনিয়াছে এই সংহস্থা। swiggy, Zomato টোর মতন app ব্যাবহার করে পুরুলিয়া শহরের বাড়িতে বাড়িতে পৌছিয়ে যাচ্ছিল মানভূম এর বিভিন্ন দুগ্ধজাত দ্রাব। Amazon. in এর মাধ্যমে পুরো ভারতবর্ষে যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ কিনতে পারবে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার দুধের ঘি। এরই সাথে নতুন সংযোজন “সুইট অন হুইল”৷

এই প্রকল্পের দ্বারা যেমন বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বেকার মানুষ আয়ের পথ পাবেন, তেমনি পুরুলিয়া জেলার দুগ্ধ চাষিরা তাদের উৎপন্ন দেশী গরুর দুধ বিক্রি করতে পারবে আরো বেশি পরিমাণে।

ইতি মধ্যেই পুরুলিয়ার মতন পিছিয়ে পরা, রুক্ষ, শুষ্ক, কঠিন ভূখণ্ডে গড়ে তোলা হয়েছে

  • একটি নতুন ‘মিল্ক রুট’
  • ২১টি মহিলা দুগ্ধ সমবায় সমিতি গঠন করে আত্মনির্ভরশীল করতে সাহায্য করা হয়েছে পুরুলিয়ার সহস্রাধিক মহিলা দুগ্ধ চাষীদের।
  • ১ টি নতুন গ্রামীন স্তরে ‘দুগ্ধ শীতলিকরণ কেন্দ্র’ গঠন করা হয়েছে।
  • মানভূম ঘি, দুধ, লস্যি, পানীর, সহ নানা ধরনের মিষ্টি বিক্রয়ের জন্য ৪টি নতুন দোকান গড়া হয়েছে।
  • ই-কমার্সের মাধ্যমে গোটা ভারতবর্ষে বিক্রয় করা হচ্ছে মানভূম দুগ্ধ সঙ্গে তৈরি পুরুলিয়ার ঘি।
  • সুইট অন হুইল এর মাধ্যমে ইচ্ছুক স্বনির্ভর উদ্যোক্তা দ্বারা পুরুলিয়া শহরের বাড়ি বাড়ি পৌছিয়ে যাবে মানভূম দুগ্ধ সঙ্ঘের তৈরি সব দ্রব্যাদি।