শীতে খেজুর গুড়ের সন্দেশ, পাটালি মোয়া ও পায়েস এর জোগান দিতে বেরিয়ে পড়েছেন খেজুর রস সংগ্রহ কারি পাসিয়ালের। জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে পুরুলিয়া বরাকর রাজ্য সড়কের ধরে ধরে তালপাতার ঘর বেঁধেছেন এই পাসিয়ালেরা।

বাড়তি আয়ের আশায় দূরদূরান্ত থেকে পাড়ি দেন এখানে। কার্তিক থেকে মাঘ এই শীতের চার মাস পাসিয়ালেরা খেজুর গাছ গুলি ভাড়ায় নিয়ে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে। দুপুর বেলায় গাছে হাঁড়ি লাগিয়ে ভোরবেলায় তা নামিয়ে ফেলেন। ভোরবেলায় প্রাতঃভ্রমণে বেরোনো মানুষের চাহিদা এই টাটকা খেজুরের রস। চাহিদা মেটানোর পর বাড়তি রসকে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি হয় গুড় যার বাজারমূল্য কিলোগ্রাম প্রতি ৮০-১২০ টাকা ও পাটালি ১০০-১৫০ টাকা। শীত বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায় খেজুরের রসের পরিমানও। আবহাওয়া দফতর সূত্রে আগেই জানানো হয়েছিল এ বছর জাঁকিয়ে শীত পড়তে চলেছে তাই পাসিয়ালেরা অনেকটা প্রত্যাশার সঙ্গেই খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে ।

বর্তমান সময়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনা ও অনেকে পেশার সাথে যুক্ত হওয়ার, ফলে কমেছে চাহিদা, কারনে ব্যবসা সবসময় ভালো হয় না বলে জানিয়েছেন তএক পাসিয়ালে আরও বলেন, শীত পড়া শুরু হতেই পরিবার নিয়ে খেজুর রস সংগ্রহ করতে শুরু করেছি । আগে খেজুর গাছের মালিকরা সামান্য কিছুর বিনিময়ে গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করতে দিতেন । কিন্তু এখন তা আর অল্প কিছুতে খেজুর গাছ দিতে রাজি হয় না ।

মোটা অংকের টাকা ও গুড় না দিলে তারা গাছ দিতে চায় না । আগে আমরা এক একটি এলাকায় ২০০ থেকে ৫০০ টি খেজুর গাছ পেতাম এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে একশতে । ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার কমলেও পূর্ব পুরুষের এই পেশা ধরে রেখে কোনরকমে কাজ করে চলেছি। জাম্বনীর আর এক শিউলি লাহাড় শেখের মতে, আগে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক বেশি রস সংগ্রহ করা সম্ভব হত এখন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় খেজুর রস সেভাবে পাওয়া যায় না ।

তাছাড়া সমস্ত জিনিস পত্রের দাম বাড়লেও খেজুর গুড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি । খেজুর রস সংগ্রহ করার পর গুড় তৈরি করতে যেমন সময় লাগে তেমনি প্রচুর জ্বালানী দরকার হয় । এর ফলে খুব একটা লাভ হয় না । এইভাবে পুরনো পেশা ধরে আর কতদিন এগিয়ে যেতে পারবো জানি না ।

এক কিল গুড় বেচলে উপার্জন হয ৮০ টাকা ,এক গ্লাস রস বেচলে মেলে ৫ টাকা । এবিষয়ে ঝাড়্গ্রাম শহরের মিষ্টি বিক্রেতা তপন পাড়ুই বলেন, খেতুর গুড়ের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। খেজুর গুড় দিয়ে রসগোল্লা, সন্দেশ, কালাকাঁদ, মৌয়া, রসমালায় সহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি বানানো হয় এই শীতের সময়। শুধু মাত্র এই শীতের সময় এই খেজুর গুড়ের মিষ্টির চাহিদা থাকে সব চেয়ে বেশি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here